ভ্যানচালকের ছেলে থেকে মালয়েশিয়ার অপরাধ রাজা

নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ এলাকায় একটি পুরনো টিনের ঘরে বেড়ে উঠেছিল আহমেদ কাউসার। তার বাবা ছিলেন একজন ভ্যানচালক—সাদামাটা, পরিশ্রমী, সৎ মানুষ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি রোদে-ঘামে ভ্যান চালিয়ে যা আয় করতেন, তা দিয়েই চলত সংসার।

কিন্তু ছোট থেকেই কাউসারের চোখ ছিল ওপরে।
সে দেখতে পেত, কিভাবে রাজনীতির আশেপাশে থাকা ছেলেরা এক রাতেই গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়ে যাচ্ছে। বাবা তার প্রজন্মের মতো সৎ জীবন কাটিয়ে কিছুই অর্জন করতে পারেননি—এই ক্ষোভ কাউসারের ভেতরে জমে উঠতে থাকে।

স্কুলজীবনের পেছনের দরজা

• পড়াশোনায় মন বসত না কাউসারের।

• এলাকায় পিকনিক, ইফতার, খেলাধুলার নামে চাঁদা তুলতে তুলতে সে ‘স্থানীয় লিডার’ হয়ে ওঠে।

• এই সময়েই তার চোখ পড়ে শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের ওপর।

• বারবার সুযোগ খোঁজে—শেষমেশ এক রাজনৈতিক মিটিংয়ে পান্ডা সাজিয়ে সেই সুযোগ পেয়ে যায়।

অয়নের ছায়া, আর কাউসারের রূপান্তর

একবার সুযোগ পাওয়ার পর কাউসার আর পেছনে তাকায়নি।

• “ভ্যানচালকের ছেলে” পরিচয়টা সে মুছে ফেলতে চায়, গর্ব নয় বরং লজ্জা মনে করে।

• অয়নের পিএস হবার পর ক্ষমতার স্বাদ পায়।

• এলাকার লোকজন এখন ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করে, পুলিশও তাকে সেলাম দেয়।

নিজেকে বড় প্রমাণের প্রতিজ্ঞা

কাউসার বারবার বলত এক কথা—
“আমার বাচ্চারা যেন ভ্যানচালকের পরিচয়ে না বড় হয়, আমি তাদের রাজা বানাব।”

এই জেদ থেকেই শুরু হয় অপরাধের পথে তার যাত্রা।

• চাঁদাবাজি, দখল, মাদক ব্যবসা—সব করে বিশাল টাকা বানায়।

• ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর গোপনে দেশ ছাড়ে।

• এখন মালয়েশিয়ায় বিলাসবহুল জীবন, স্ত্রী মারিয়া ও সন্তানদের নিয়ে রাজকীয়ভাবে বসবাস করে।