শীতলক্ষ্যার ছায়া
২০১৩ সালের এক বিকেল। নারায়ণগঞ্জের ব্যস্ত শহরের কোণে অবস্থিত “সুধীজন পাঠাগার” তখন ছিল শান্ত আর কাগজের পাতায় হারিয়ে থাকা তরুণ মেধাবীদের জায়গা। সেই পাঠাগারে যাচ্ছিল ১৭ বছরের মেধাবী ছাত্র তানভির ত্বকী। বই ভালোবাসা, কবিতা আর মুক্তচিন্তার প্রতীক হয়ে উঠেছিল সে শহরের যুবসমাজে।
কিন্তু সবসময় মুক্তচিন্তা ক্ষমতাধরদের চোখে খারাপ লাগে।
তাকে লক্ষ করছিল এক গোপন গোষ্ঠী। সেই গোষ্ঠীর ছায়াতলে ছিলো একজন — আহমেদ কাউসার। বাহ্যিকভাবে একজন সমাজসেবী, কিন্তু গোপনে সন্ত্রাসী পরিকল্পনার মাস্টারমাইন্ড।
সেই বিকেলে, পাঠাগারের মোড় ঘুরতেই একটি মাইক্রোবাস এসে দাঁড়ায়। ৪ জন মুখোশধারী ব্যক্তি দ্রুত নামিয়ে ফেলে ত্বকীকে। সে আর ফিরলো না।
রাতের আঁধারে, শহরের বাইরে একটি পরিত্যক্ত গুদামে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। আহমেদ কাউসার নিজে উপস্থিত থেকে নির্দেশ দেয় — “ওর কণ্ঠ চিরতরে থেমে যাক।”
ত্বকীকে ভয়ানক নির্যাতন করা হয়। প্রশ্ন ছিল না, কেবল নীরব হাহাকার আর ক্ষোভ। কাউসার জানত, শহরে কেউ কথা বলবে না। সবাই ভয় পায়।
সেই রাতেই শীতলক্ষ্যা নদীর অন্ধকার বুকে ভাসিয়ে দেওয়া হয় ত্বকীর নিথর দেহ।
কয়েকদিন পর, শহরে গুঞ্জন ওঠে। ছাত্ররা রাস্তায় নামে। ত্বকীর স্মৃতিতে শহর জেগে ওঠে। কিন্তু কাউসার? সে ছিল তখনও অন্ধকারের প্রহরী।
Post Comment